জামিয়া-শরীফ-মানিকগঞ্জ-মাদ্রাসা

জামিয়ার সংক্ষিপ্ত পরিচিতি ও ইতিহাস

মাদরাসা শিক্ষা :

পৃথিবীর বুকে যত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে তন্মধ্যে সর্বাধিক আদর্শিক প্রতিষ্ঠান হচ্ছে দরসে নিজামী বা কওমী মাদরাসা। আল্লাহ তাআলার একত্ববাদ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে শিরক, কুফর, বিদআত ও কুসংস্কার থেকে মানব জাতিকে রক্ষার্থে ইসলামী তাহযীব-তামাদ্দুন সংরক্ষণে এককথায় কুরআন সুন্নাহ তথা ইলমে ওহীর আলো পৃথিবীতে প্রচার-প্রসারের উদ্দেশ্যে যেসব প্রতিষ্ঠানের ভিত্তি স্থাপিত হয় সেগুলোই মূলত কওমী মাদরাসা নামে পরিচিত।

কওমী মাদরাসার মূল ইতিহাস পর্যালোচনা করলে বলতে হয়, মক্কার সেই বিখ্যাত সাহাবী হযরত যায়েদ বিন আরকাম রা. এর ঘর থেকে তার অগ্রযাত্রা শুরু। যা দারে যায়েদ বিন আরকাম রা. হিসেবে আমাদের নিকট পরিচিত। অতঃপর নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাহ যখন হিযরত করে মদিনায় আগমন করলেন, তখন মসজিদে নববীর কোল ঘেসে প্রতিষ্ঠিত করলেন সুফফাহ বা আসহাবে সুফফাহ নামক মাদরাসা। যা ছিল একসঙ্গে তেলাওয়াত, তালীম-তরবিয়াত, তাযকিয়া এবং দ্বীন প্রচারের কেন্দ্রবিন্দু। সে এক লম্বা ইতিহাস। মদিনা থেকে কুফা-বাগদাদ হয়ে শত ঘাত প্রতিঘাত পার করে আসহাবে সুফ্ফার আদলে মুসলমানদের ঈমান-আকিদা সংরক্ষণের প্রত্যয়ে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাহ এর লাঠির ইশারায় ভারতের উত্তর প্রদেশে সাহারানপুর জেলার দেওবন্দ এলাকায় প্রতিষ্ঠিত হয় ‘দারুল উলুম দেওবন্দ মাদরাসা’। আমাদের পল্লবী আফতাব উদ্দিন মাদরাসা সেই আদর্শে প্রতিষ্ঠিত, তারই একটি অন্যতম শাখা।

প্রতিষ্ঠানের সূচনা :
প্রত্যেক জিনিসের সূচনা ছোট আকারেবই হয়ে থাকে। অতঃপর তা বড় হতে হতে একসময় অনেক বিশাল আকার ধারণ করে। যেমন মানব সৃষ্টি সূচনা এক ফোঁটা পানি থেকে। এরপর রক্তবিন্দু, গোস্তপিÐ, অতঃপর হাড়-গোস্ত-রুহ মিলিয়ে পূর্ণাঙ্গ একজন মানুষ হয়, তেমনি আজকের এই ঐতিহ্যবাহী পল্লবী আফতাব উদ্দিন মাদরাসা। সারাদেশে যার সুনাম খ্যাতি। ছোট একটি কুড়েঘর থেকে তার যাত্রা শুরু হয়েছিল।

এলাকার ধার্মিক শিক্ষানুরাগী কিছু ধর্মপ্রাণ লোক মুসলমানদের ছেলে-মেয়েদের কুরআন কারীমের শিক্ষা দেয়ার জন্য ছোট আকারে কুড়েঘরে একটি ফোরকানিয়া মক্তব শুরু করেন। তাদের মধ্যে অনেকেই ইহজগত ত্যাগ করে কবরের জগতে চলে গেছেন। আবার কেউ কেউ জীবিত রয়েছেন। আমরা দোয়া করি যারা চলে গেছেন আল্লাহ তাআলা যেন তাদের জন্য এই প্রতিষ্ঠানকে নাজাতের উসীলা বানান। আর যাঁরা জীবিত আছেন আল্লাহ তাআলা তাঁদের নেক হায়াত দান করেন এবং দ্বীনের খাদেম হিসেবে কবুুল করেন। অতঃপর বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ ধনবান ও দানশীল ব্যক্তি ইসলাম গ্রæপের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান জনাব আলহাজ্ব জহুরুল ইসলাম সাহেব ঢাকা শহরের প্রাণকেন্দ্র মিরপুর পল্লবীর মত দামী জায়গায় মাদরাসা ও মসজিদের জন্য এত বড় জায়গা বরাদ্দ করত ওয়াক্ফ করেন। অতঃপর আল্লাহর মেহেরবানীতে ১৯৮৭ খ্রিস্টাব্দে ২৩ জুলাই জমি ওয়াকফদাতা আলহাজ্ব জহুরুল ইসলাম সাহেবের বাবার নামানুসারে প্রতিষ্ঠান আকারে জন্ম নেয় পল্লবী আফতাব উদ্দিন মাদরাসা ও এতিমখানা।

একনজরে পল্লবী আফতাব উদ্দিন মাদরাসা :
নাম ও ঠিকানা : পল্লবী আফতাব উদ্দিন মাদরাসা ও এতিমখানা। (কারিগরি শিক্ষাসমন্বিত একটি অনন্য দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।) ঠিকানা : জে # ৩,৪,৫,৬। বর্ধিত পল্লবী, পল্লবী, ঢাকা-১২১৬।
ভৌগলিক অবস্থান : ঢাকা জেলার মিরপুর অঞ্চলের পল্লবীস্থ রূপনগর থানার একটি অভিজাত এলাকা বর্ধিত পল্লবীর ‘জে’ ব্লোকের ২৫ কাঠা মাদরাসার নিজস্ব জায়গার ওপর প্রতিষ্ঠানটি অবস্থিত।
প্রতিষ্ঠাতা : জনাব আলহাজ্ব জহুরুল ইসলাম সাহেব। প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ইসলাম গ্রæপ।
প্রতিষ্ঠাতা ও মুতাওয়াল্লী : বিশিষ্ট সমাজ সেবক ও ধর্মানুরাগী জনাব আলহাজ্ব শফিউল ইসলাম কামাল সাহেব। চেয়ারম্যান নাভানা গ্রুপ।
বর্তমান মুহতামিম/প্রিন্সিপাল : মুফতী নূরুল আলম সাহেব দা. বা.। খতীব, পল্লবী আফতাব উদ্দিন মাদরাসা জামে মসজিদ।

উল্লেখযোগ্য কয়েকটি লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য :

মুসলিম জনগণের মধ্যে ধর্মীয় প্রেরণা সৃষ্টি করা, তাদের মধ্যে নৈতিকতাবোধ জাগিয়ে তোলা, সমাজের বুক হতে সর্বপ্রকার বিদআত দূর করা আবার শিক্ষার্থীদের কুরআনুল কারীম ও সুন্নাতে নববীর পরিপূর্ণ শিক্ষাদান করা। শিক্ষার্থীদের কর্মজীবনে স্বনির্ভর স্বাবলম্বীরুপে গড়ে তোলার মানসে মেধা ও আগ্রহভিত্তিক বৃত্তিমূলক শিক্ষা দান।